মালয়েশিয়া প্রবাসী স্বামী দেশে ফিরে দেখেন নিজের টাকার বাড়িতে স্ত্রীর নতুন সংসার

প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে। এর পর স্বামী বিদেশে। নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন, টাকাপয়সা সবই পাঠান স্ত্রীর নামে। আর স্ত্রী প্রেমিক স্বামীর টাকায় নিজের নামে নির্মিত বাড়িতে আরেক স্বামী নিয়ে দিব্যি সংসার করে যাচ্ছেন। ১৪ বছর পর মালয়েশিয়া প্রবাসী যুবক দেশে ফিরে জানতে পারেন, স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে মামাত ভাইকে বিয়ে করে সংসার করছেন।

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার নয়মাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় মাহফুজার রহমান সাবেক স্ত্রী রোজিনা খাতুন এবং তার বর্তমান স্বামী ও শ্বশুরসহ আট জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। ১৮ মে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

জেলার শাজাহানপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট ও আমলি আদালতে দায়ের করা ওই মামলায় ৪২ লাখ টাকায় নির্মিত বাড়ি, নগদ টাকা এবং স্বর্ণালংকারসহ দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে।

প্রতারিত যুবক শাজাহানপুর উপজেলার শৈলধুকড়ি গ্রামের মৃত হবিবর রহমানের ছেলে মাহফুজার রহমান জানান, ২০০০ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনার সময় পার্শ্ববর্তী উপজেলা ধুনটের বেড়ের বাড়ি গ্রামের মৃত মনছুর আলীর মেয়ে রোজিনা খাতুনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চার বছর প্রেম করার পর ২০০৪ সালে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। এরপর ২০০৮ সালে স্ত্রীকে তার বড় ভাইয়ের বাড়ির পাশে একটি ভাড়া বাড়িতে রেখে মালয়েশিয়া চলে যান প্রেমিক স্বামী।

সেখান থেকে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং টাকাও পাঠাতেন। ওই টাকায় উপজেলার নয়মাইল এলাকায় দু’জনের নামে জায়গা কিনে বাড়ি করতে বলেন মাহফুজ। কিন্তু রোজিনা খাতুন শুধু তার নিজের নামে জায়গা কিনে বাড়ি নির্মাণ করেন। এতে ৪২ লাখ টাকা খরচ হয়। মাহফুজার রহমানের সাত বিঘা জমি লিজ দেয়া ছিল। সেই টাকাও রোজিনা নিজের কাছে রাখেন।

মালয়েশিয়া থাকাকালে ২০২১ সালের আগস্টে মাহফুজার রহমান পুলিশের হাতে আটক হন। প্রায় সাড়ে ৫ মাস জেল খাটার পর মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ তাকে গত ২০ জানুয়ারি দেশে পাঠিয়ে দেয়। বাড়িতে এসে মাহফুজ জানতে পারেন, তার স্ত্রী রোজিনা খাতুন তাকে তালাক দিয়ে মামাত ভাই রেজাউল করিমকে বিয়ে করে মাহফুজার রহমানের টাকায় নির্মিত বাড়িতে বসবাস করছেন।

মাহফুজার রহমান বলেন, ‘আমি মালয়েশিয়ায় আটক থাকার সময় রোজিনা আমার বাড়ির ঠিকানায় তালাকের নোটিশ পাঠায়। এটা আমার জানা নেই। ঘরবাড়ি ও ১৫ ভরি স্বর্ণসহ সব সম্পদ আত্মসাৎ করে সে আমাকে পথে বসিয়েছে। আমার টাকায় করা বাড়িতে কথা বলতে গিয়েছিলাম; কিন্তু সে ঘরের দরজা খোলেনি।’